জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে পরিচালিত মোবাইল কোর্টের অভিযানে মান্দা উপজেলার সতিহাট এলাকার মেসার্স ভাই ভাই ব্রিকস-এর চিমনি ও কিলন স্ক্যাভেটর দিয়ে ভেঙ্গে দেওয়া হয়।
এরপর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের চকমনু ও চকাদিন গ্রামে মেসার্স রাহিদ এন্টারপ্রাইজ এবং মেসার্স রিফাত ব্রিকস-এর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। লাইসেন্স ছাড়াই ইট উৎপাদন ও বিক্রির অপরাধে যথাক্রমে ২০,০০০ এবং ১০,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি স্ক্যাভেটরের সাহায্যে চুল্লি ভেঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আগুন নিভিয়ে ভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নওগাঁতে মোট ১৬২টি ইটভাটা রয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ২৩টির পরিবেশগত ছাড়পত্র রয়েছে। বাকি ১৩৬টি ভাটা কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে। মান্দা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ইটভাটা থাকলেও এর একটিও বৈধ নয়।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ এবং ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ অনুসারে কৃষিজমি, বসতবাড়ি, পাহাড়, বন, বা জলাভূমির এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। তবুও এসব এলাকার ফসলি জমি ও জনবসতির কাছেই অবৈধ ভাটা গড়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (বাপা) নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি রফিতকুল ইসলাম বলেন, “কৃষিজমি ও আবাসিক এলাকার আশেপাশে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে ফসল, জীববৈচিত্র্য এবং মানুষের স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রশাসনের চলমান কার্যক্রম ইতিবাচক, তবে এটি থেমে গেলে সমস্যার সমাধান হবে না।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, “মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নওগাঁতে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য নওগাঁ গড়ে তুলতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
অবৈধ ইটভাটা ধ্বংসের উদ্যোগে স্থানীয় বাসিন্দারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা প্রশাসনকে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
পরিবেশ সংরক্ষণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষায় জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয় এবং এর ধারাবাহিকতা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।