1. admin@protidinervor.com : admin :
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ১২:৩২ পূর্বাহ্ন

ঈদে ঢাকার নিরাপত্তা নিয়ে সতর্কবার্তা, পুলিশের বিশেষ পরিকল্পনা

অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী রাজধানীবাসীকে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার আগে নিজ দায়িত্বে বাসাবাড়ি, দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন।

 

শনিবার (৮ মার্চ) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ পরামর্শ দেন।

 

নিরাপত্তার দায়িত্ব নাগরিকদেরও নিতে হবে :

 

ঈদের সময় রাজধানী ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায়। হাজার হাজার মানুষ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ কাটাতে গ্রামের পথে রওনা হন। এই সময়টায় চুরি, ডাকাতি এবং অন্যান্য অপরাধের ঝুঁকি বাড়ে। তবে পুলিশের জনবল সীমিত, তাই বাড়ি ছাড়ার আগে নাগরিকদেরই নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা জরুরি বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।

 

তিনি বলেন :

“আর এক সপ্তাহ পর ঢাকাবাসীর অনেকে নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে যাবেন। আপনারা যখন বাড়ি যাবেন, তখন নিজ দায়িত্বে ফ্ল্যাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যাবেন।”

 

রমজানে তারাবিহ নামাজের সময়ও বাড়ি ও দোকান খালি থাকার সুযোগ নিয়ে চুরির ঘটনা ঘটে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

“তারাবিহ নামাজ দেড় থেকে দুই ঘণ্টা ধরে চলে, এ সময় রাস্তাঘাটে জনশূন্যতা দেখা যায়। তাই বাড়ি, ফ্ল্যাট ও দোকান সযত্নে রেখে আসবেন,”—বলেন তিনি।

 

ঢাকায় স্ট্রিট ক্রাইমের উত্থান :

 

ডিএমপি কমিশনার ঢাকার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে ভালো বলে দাবি করলেও স্বীকার করেন যে রাজধানীতে স্ট্রিট ক্রাইম বা পথেঘাটের অপরাধ বেড়েছে।

 

তিনি বলেন :

“ঢাকা শহরে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে অপরাধীরা মুঠোফোন টান দেয়। উঠতি বয়সের ছেলেরা, যাদের আমরা কিশোর গ্যাং বলি, তারা বাসের যাত্রী, প্রাইভেট কারের যাত্রী ও মোটরবাইক চালকদের মুঠোফোন কেড়ে নেয়।”

 

কমিশনার আরও জানান :

“এই চুরি হওয়া মুঠোফোনগুলো সীমান্তবর্তী এলাকায় পাচার করে বিক্রি করা হচ্ছে। এমন অনেক ফোন আছে, যেগুলোর দাম লাখ টাকা।”

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, কিশোর গ্যাং ও স্ট্রিট ক্রাইমের কারণে নগরীর সাধারণ মানুষ উদ্বেগের মধ্যে আছেন।

 

ঈদে ঢাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা :

 

ঈদের সময় রাজধানী অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায়, তখন বিভিন্ন অপরাধ চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাই চুরি ও ডাকাতি প্রতিরোধে এবার কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?

 

ডিএমপি কমিশনার জানান,

“আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের টহল বাড়ানো হবে। তবে নাগরিকদেরও সচেতন থাকতে হবে।”

 

তিনি আরও বলেন,

“যারা বাসাবাড়ি বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ফাঁকা রেখে যাবেন, তারা আশপাশের প্রতিবেশী বা নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন।”

 

পূর্বের ঘটনা: নগরীতে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ :

 

এর আগেও ঢাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঈদ কিংবা অন্যান্য বড় ছুটির সময় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে থাকে।

 

গত বছর ঈদের ছুটির সময় ঢাকায় বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, অনেকেই নিজেদের ফ্ল্যাটের নিরাপত্তায় অবহেলা করেন, ফলে চোরচক্র সহজেই সেগুলোর সুযোগ নেয়।

 

এদিকে, স্ট্রিট ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে আনতে গত বছর ডিএমপি বিশেষ অভিযান চালিয়েছিল। এতে বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং চক্র ধরা পড়ে। তবে অপরাধ কমার বদলে তা আবার বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

 

নাগরিকদের করণীয় :

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, নাগরিকদেরও কিছু নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি, যেমন—

 

বাসার দরজা-জানালায় অতিরিক্ত তালা লাগানো

 

নিরাপত্তাকর্মী বা বিশ্বস্ত প্রতিবেশীদের কাছে বাড়ির চাবি রাখা

 

সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলে সেগুলো সচল রাখা ও রেকর্ডিং চালু রাখা

জরুরি প্রয়োজনে ডিএমপির হটলাইনে যোগাযোগ করা

 

ঢাকাবাসী এবার কতটা সতর্ক থাকবেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগোরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2025