1. admin@protidinervor.com : admin :
রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০১:৫১ পূর্বাহ্ন

সংবিধানে কিছু নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার অন্তর্ভুক্তিতে সুপারিশ সংস্কার কমিশনের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

সংবিধানে কিছু নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার অন্তর্ভুক্ত করতে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সংবিধান সংস্কার কমিশন ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের সংস্কারের সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন জমা দেন। সুপারিশের সারসংক্ষেপ কমিশনের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।

মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা বিষয়ে কমিশনের প্রতিবেদনে সুপারিশে বলা হয়েছে-

এক. কমিশন সংবিধানের অধিকার সম্পর্কিত অনুচ্ছেদসমূহ পর্যালোচনা করে বেশ কিছু সুপারিশ প্রস্তাব করছে। বিদ্যমান সংবিধানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগের অধিকারসমূহ সমন্বিত করে ‘মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা’ নামে একটি একক সনদ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আদালতে বলবৎযোগ্য হবে এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অধিকার ও নাগরিক, রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে বিদ্যমান তারতম্য দূর করবে।

দুই. সংবিধানে কিছু নতুন অধিকার যেমন খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, ইন্টারনেট প্রাপ্তি, তথ্য পাওয়া, ভোটাধিকার ও রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণ, গোপনীয়তা রক্ষা, ভোক্তা সুরক্ষা, শিশু, উন্নয়ন, বিজ্ঞান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

তিন. বিদ্যমান অধিকারের অনুচ্ছেদসমূহের সংস্কার যেমন বৈষম্য নিষিদ্ধকরণের সীমিত তালিকা বর্ধিতকরণ, জীবনের অধিকার রক্ষায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুম থেকে সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, জামিনে মুক্তির অধিকার অন্তর্ভুক্তকরণ এবং নিবর্তনমূলক আটক সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।

চার. প্রতিটি মৌলিক অধিকারের জন্য পৃথক সীমা আরোপের পরিবর্তে একটি সাধারণ সীমা নির্ধারণ এবং সীমা আরোপের ক্ষেত্রে ভারসাম্য ও আনুপাতিকতা পরীক্ষার বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা অধিকার খর্বের ঝুঁকি কমাবে।

পাঁচ. যে সব অধিকার (শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, বাসস্থান ইত্যাদি) বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য সম্পদ ও সময় প্রয়োজন, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি রেখে সম্পদের প্রাপ্যতার ভিত্তিতে কার্যকর করার সুপারিশ করা হয়েছে। এই পদ্ধতি সরকারের জবাবদিহিতা বাড়াবে এবং সম্পদের প্রাপ্যতা অনুযায়ী অধিকার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।

সংবিধানের মূলনীতি ও সংসদের কাঠামোতে পরিবর্তন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাঠামো, মৌলিক অধিকারের পরিসর বাড়ানো, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলসহ সংবিধানের নানা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। পদত্যাগ করে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান। এরই ধারাবাহিকতায় ৭ অক্টোবর অধ্যাপক আলী রীয়াজকে প্রধান করে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছিল। এ কমিশন অংশীজনদের সাথে বিনিময় ও পরামর্শ নিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগোরির আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2025