রেললাইনে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পাওয়া এক তরুণীর লাশের পেছনের নৃশংস রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। ২৩ বছর বয়সী রিফাত বিন সাজ্জাদ নামের এক যুবক এই নৃশংস ঘটনায় জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। হত্যার পরও অপরাধ চালিয়ে যাওয়া সাজ্জাদ, ইজিবাইক চুরির সময় জনতার হাতে ধরা পড়ে এবং তার মোবাইল ভিডিওর মাধ্যমে খুনের ঘটনা ফাঁস হয়।
গত ১৪ জানুয়ারি আটোয়ারী উপজেলার কিসমত এলাকায় রেললাইনের পাশে এক নারীর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং হত্যার চিহ্ন স্পষ্ট ছিল। এই নারীর পরিচয় নিশ্চিত করতে না পারায় একটি পরিবার ভুল করে তাকে নিজেদের মেয়ে মনে করে দাফন সম্পন্ন করে।
পুলিশের ভাষ্যমতে, আসামি সাজ্জাদ ধর্ষণের পর তরুণীকে রেললাইনে ফেলে হত্যা নিশ্চিত করতে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এরপর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কেটে তার লাশ ট্রেনের নিচে ফেলে পালিয়ে যায়।
৮ মার্চ রাতে রাধানগর এলাকায় একটি ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে সাজ্জাদ জনতার হাতে ধরা পড়ে। তার মোবাইলে এক তরুণীকে বেঁধে রাখার ভিডিও দেখে জনতা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করে। পরে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সাজ্জাদ হত্যার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়।
সাজ্জাদ জানায়, ট্রেনে চলার সময় ভুক্তভোগীর সাথে তার পরিচয় হয়। মাকে গালমন্দ করার অভিযোগ তুলে তাকে রেললাইন সংলগ্ন নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। এরপর তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
এই ঘটনায় আটোয়ারী থানায় ধর্ষণ ও হত্যার পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাজ্জাদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
পঞ্চগড় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী জানান, “আমরা এখনও ভুক্তভোগী নারীর পরিচয় নিশ্চিত করতে পারিনি। তবে প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি এবং ঘটনার সত্যতা উদঘাটন হয়েছে। আমরা ভুক্তভোগীর পরিবারকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।”
এই নির্মম ঘটনায় সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, আসামির অতীত অপরাধের রেকর্ড এবং ভুক্তভোগীর পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য তদন্ত চলমান।